জার্মানিতে গাড়ি চালানোর ৭টি গোপন কৌশল: যা না জানলে চরম বিপদে পড়বেন

webmaster

독일에서 운전하는 법 - **Prompt:** A diverse young adult (25-35 years old), dressed in smart casual, modest attire (e.g., a...

আরে বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালোই আছেন! আজ আপনাদের সাথে এমন একটা বিষয় নিয়ে কথা বলবো, যেটা আমার নিজেরই বহু দিনের স্বপ্ন ছিল – জার্মানিতে গাড়ি চালানো!

ভাবতেই কেমন রোমাঞ্চ লাগছে, তাই না? জার্মানির ঝাঁ চকচকে রাস্তা, আর বিশেষ করে সেই বিখ্যাত অটোবান, যেখানে গতি নিয়ে হয়তো আমাদের দেশের মতো অত চিন্তা করতে হয় না। ভাবছেন, এ তো দারুণ ব্যাপার!

কিন্তু সত্যি বলতে, জার্মানির রাস্তায় গাড়ি চালানোর কিছু নিজস্ব নিয়মকানুন আছে যা না জানলে একটু বিপদেই পড়তে হতে পারে। প্রথম যখন আমি এখানে গাড়ি চালানোর কথা ভেবেছিলাম, তখন এই নিয়মগুলো আমাকেও বেশ ভাবিয়েছিল। বিদেশি লাইসেন্স দিয়ে কতদিন চালানো যাবে, নতুন লাইসেন্স কিভাবে পাবো, বা জরুরি অবস্থায় কী করতে হবে – এমন হাজারো প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তবে চিন্তা নেই, আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের জন্য সব খুঁটিনাটি নিয়ে এসেছি। জার্মানির রাস্তায় আপনার ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা যেন কোনো দুঃস্বপ্নে পরিণত না হয়, বরং হয়ে ওঠে এক দারুণ অ্যাডভেঞ্চার, সেই নিশ্চয়তা দিতে পারি। তো চলুন, আর দেরি না করে, জার্মানির রাস্তায় গাড়ি চালানোর সব প্রয়োজনীয় তথ্য, টিপস আর নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই!

জার্মানির রাস্তায় প্রথমবার পা রাখার আগে: লাইসেন্স আর জরুরি কাগজপত্র

독일에서 운전하는 법 - **Prompt:** A diverse young adult (25-35 years old), dressed in smart casual, modest attire (e.g., a...

জার্মানিতে এসে প্রথম যে চিন্তাটা আমাকে খুব ভুগিয়েছিল, সেটা হলো ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে। আমাদের দেশের লাইসেন্স দিয়ে কি আদৌ এখানে গাড়ি চালানো যাবে? কতদিন চালানো যাবে?

এইসব প্রশ্ন আমাকে অস্থির করে তুলেছিল। আমার মনে আছে, প্রথম প্রথম যখন এই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলাম, তখন মনে হয়েছিল যেন একটা বিশাল পাহাড় ডিঙাতে হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেল। জার্মানির নিয়ম অনুযায়ী, যদি আপনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়ার বাইরের কোনো দেশ থেকে আসেন, তাহলে আপনার নিজস্ব লাইসেন্স দিয়ে জার্মানিতে সর্বোচ্চ ছয় মাস গাড়ি চালাতে পারবেন। এরপর যদি আপনি জার্মানিতেই স্থায়ীভাবে থাকার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনাকে জার্মান ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে। এই ছয় মাস সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়ের মধ্যেই আপনাকে লাইসেন্স রূপান্তরের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। সত্যি বলতে, এই ছয় মাসের মধ্যে নিয়মগুলো ভালোভাবে জেনে নেওয়া খুব জরুরি। আমার প্রথম জার্মানিতে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতাটা ছিল ভাড়ার গাড়ি দিয়ে, আর তখন আমি বিদেশি লাইসেন্স নিয়েই চালিয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাটা দারুণ ছিল, তবে মাথায় সব সময় নিয়ম ভাঙার ভয় থাকত!

বিদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ

বন্ধুরা, এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেই একটু দ্বিধায় ভোগেন। আমি নিজেও ভুগেছি। আপনার বিদেশি লাইসেন্স যদি ইংরেজিতে লেখা না থাকে, তাহলে একটি জার্মান অনুবাদ বা আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট (IDP) সঙ্গে রাখাটা আবশ্যক। এটা একটা সহজ সমাধান। আমি প্রথম যখন ইউরোপে এসেছিলাম, তখন IDP নিতে ভুলে গিয়েছিলাম, আর সে এক এলাহি কাণ্ড!

ভাগ্যিস তখন জার্মানিতে গাড়ি চালানোর প্রয়োজন পড়েনি। এই IDP আপনার নিজস্ব লাইসেন্সের মতোই কাজ করবে। তবে মনে রাখবেন, এই সুবিধার মেয়াদ কিন্তু সীমিত। সাধারণত, আপনার জার্মানিতে প্রথম বসবাসের তারিখ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত আপনি আপনার বিদেশি লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যদি আপনার জার্মানিতে থাকার মেয়াদ ১২ মাসের বেশি না হয়, তাহলে আপনি এই সময়সীমা বাড়িয়ে এক বছর পর্যন্ত নিতে পারেন, তবে এর জন্য কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদন প্রয়োজন। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জার্মান লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।

জার্মান ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া

বিদেশি লাইসেন্স দিয়ে ছয় মাস পার হওয়ার পর জার্মানিতে গাড়ি চালাতে হলে আপনাকে জার্মান লাইসেন্স নিতেই হবে। এই প্রক্রিয়াটা একটু জটিল মনে হলেও, আসলে খুব কঠিন কিছু নয়। এর জন্য আপনাকে ড্রাইভিং স্কুলের মাধ্যমে তাত্ত্বিক (theoretical) এবং ব্যবহারিক (practical) পরীক্ষা দিতে হতে পারে। আমার এক বন্ধুর অভিজ্ঞতা বলি, সে ভেবেছিল শুধু প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিয়েই কাজ হয়ে যাবে, কিন্তু পরে জানতে পারল থিওরি পরীক্ষাও দিতে হবে!

নিয়মটা হলো, আপনার দেশের সাথে জার্মানির ড্রাইভিং লাইসেন্স চুক্তির উপর নির্ভর করে, আপনাকে শুধু প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হতে পারে, অথবা থিওরি এবং প্র্যাকটিক্যাল দুটোই দিতে হতে পারে। আমার ক্ষেত্রে সৌভাগ্যবশত শুধু প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিয়েই কাজ হয়ে গিয়েছিল, কারণ আমার দেশের লাইসেন্সের সাথে জার্মানির একটি চুক্তি ছিল। পরীক্ষাগুলো অবশ্য বেশ কঠিন হয়, তাই ভালো করে প্রস্তুতি নেওয়াটা জরুরি। ড্রাইভিং স্কুলগুলো এক্ষেত্রে প্রচুর সাহায্য করে, তারা আপনাকে পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবে এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে সহায়তা করবে।

বিষয় জার্মানির নিয়ম
বিদেশি লাইসেন্সের মেয়াদ প্রথম ৬ মাস (কিছু ক্ষেত্রে ১ বছর পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব)
লাইসেন্স রূপান্তর ৬ মাস পর জার্মান লাইসেন্সে রূপান্তর বাধ্যতামূলক
নিয়ম ভাঙলে জরিমানা কঠোর জরিমানা ও পয়েন্ট সিস্টেম (Flensburg-Punkte)
অটোবানের সর্বনিম্ন গতি ৬০ কিমি/ঘণ্টা

অটোবানের জাদু: গতি আর নিয়মকানুনের সমাহার

অটোবান! এই নামটা শুনলেই কেমন একটা শিহরণ জাগে, তাই না? জার্মানির এই বিখ্যাত হাইওয়েগুলো নিয়ে সারা বিশ্বে অনেক গল্প প্রচলিত। প্রথম যখন আমি অটোবানে গাড়ি চালিয়েছিলাম, তখন মনে হয়েছিল যেন উড়ছি!

অসীম গতির একটা অনুভূতি, কিন্তু একই সাথে একটা সুশৃঙ্খল পরিবেশ। এটা সত্যিই এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। তবে হ্যাঁ, “অসীম গতি” মানে এই নয় যে আপনি যেকোনো গতিতে গাড়ি চালাতে পারবেন। কিছু নিয়মকানুন অবশ্যই মেনে চলতে হয়, যা আমাদের দেশের হাইওয়েগুলোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অটোবানে গতির কোনো নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বসীমা না থাকলেও, নির্দিষ্ট কিছু স্থানে, যেমন নির্মাণাধীন এলাকা বা শহরের কাছাকাছি, গতির সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই সীমাগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়। আমার মনে আছে, একবার অসাবধানতাবশত একটি নির্মাণাধীন এলাকার গতিসীমা অতিক্রম করার জন্য জরিমানার মুখে পড়েছিলাম!

তাই সাইনগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয়।

Advertisement

অসীম গতির ধারণা এবং বাস্তবতা

অনেকে ভাবেন অটোবানে বুঝি কোনো গতির সীমা নেই, ইচ্ছামতো চালানো যায়। এই ধারণাটা কিছুটা ঠিক, আবার কিছুটা ভুল। আমি যখন প্রথমবার অটোবানে গাড়ি চালানোর সুযোগ পেলাম, তখন আমার মনেও একই ধারণা ছিল। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা একটু অন্যরকম। হ্যাঁ, অটোবানের বেশিরভাগ অংশে গতির কোনো নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বসীমা নেই (Recomended Speed 130 km/h), তবে এর মানে এই নয় যে আপনি ২০০ বা ২৫০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে চালাবেন। নিরাপদ গতিতে এবং রাস্তার অবস্থা, আবহাওয়া, ট্র্যাফিকের ঘনত্ব বিচার করে গাড়ি চালানো উচিত। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, উচ্চ গতিতে গাড়ি চালানোটা বেশ রোমাঞ্চকর, কিন্তু একই সাথে খুব মনোযোগের প্রয়োজন হয়। সামান্য ভুলও বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। আর কিছু কিছু জায়গায়, যেমন শহরে প্রবেশ করার সময়, ব্রীজের উপর বা নির্মাণাধীন এলাকায়, নির্দিষ্ট গতির সীমা থাকে যা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এগুলো সাধারণত বড় বড় সাইন দিয়ে নির্দেশিত থাকে।

লেন এবং ওভারটেকিং এর নিয়ম

অটোবানে গাড়ি চালানোর সময় লেন এবং ওভারটেকিং এর নিয়মগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের মতো এখানে এলোমেলোভাবে লেন পরিবর্তন করা বা ডান দিক দিয়ে ওভারটেক করাটা একেবারেই নিষিদ্ধ। আমার মনে আছে, প্রথম প্রথম আমি যখন অটোবানে গাড়ি চালাচ্ছিলাম, তখন বাম লেনটা দেখেই বেশি গতিতে যাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল। কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম, বাম লেনটা শুধুমাত্র ওভারটেক করার জন্য, এবং দ্রুত গতির গাড়ির জন্য। আপনি যদি ধীরে চালান, তাহলে আপনাকে ডান লেনেই থাকতে হবে। ডান লেন থেকে ওভারটেক করাটা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এর জন্য বড় ধরনের জরিমানা হতে পারে। সবসময় বাম লেন দিয়ে ওভারটেক করতে হবে, আর ওভারটেক করার পর আবার ডান লেনে ফিরে আসাটা নিয়ম। এই শৃঙ্খলাটা জার্মান ট্র্যাফিকের একটা বড় বৈশিষ্ট্য, যা সত্যি বলতে আমার খুব ভালো লাগে।

রাস্তার ইশারা বোঝা: জার্মান ট্র্যাফিকের খুঁটিনাটি

জার্মানির রাস্তায় গাড়ি চালাতে হলে রাস্তার ইশারা বা ট্র্যাফিক সাইনগুলো খুব ভালোভাবে বোঝাটা জরুরি। আমাদের দেশের ট্র্যাফিক সাইনগুলোর সাথে কিছু মিল থাকলেও, জার্মান সাইনগুলোর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা না জানলে সত্যিই বিপদে পড়তে হতে পারে। আমার মনে আছে, প্রথম প্রথম আমি কিছু সাইন দেখে বেশ বিভ্রান্ত হয়ে যেতাম। বিশেষ করে গোল চত্বর (roundabout) বা নির্দিষ্ট পার্কিং এলাকার সাইনগুলো একটু ভিন্ন রকমের। এখানকার সাইনগুলো আন্তর্জাতিক মানের হলেও, কিছু স্থানীয় নিয়ম আছে যা শুধু জার্মানির নিজস্ব। ট্র্যাফিকের নিয়মগুলো এখানে খুবই কঠোরভাবে মানা হয়, তাই একটা ছোট্ট ভুলও বড় ধরনের জরিমানার কারণ হতে পারে। আমার এক বন্ধু একবার ভুল করে একমুখী রাস্তায় উল্টো দিক দিয়ে ঢুকে পড়েছিল, আর তার জন্য তাকে বেশ বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়েছিল। তাই সাইনগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা খুব জরুরি।

গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক সাইন ও তাদের অর্থ

জার্মানির রাস্তার ইশারাগুলো সাধারণত তিনটি মূল ভাগে বিভক্ত: বিপদসূচক সাইন (warning signs), বাধ্যতামূলক সাইন (mandatory signs) এবং নির্দেশনামূলক সাইন (informational signs)। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বিপদসূচক সাইনগুলো সাধারণত ত্রিভুজাকৃতির এবং লাল বর্ডারযুক্ত হয়, যা কোনো সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে। যেমন, রাস্তা পিচ্ছিল বা সামনে বাঁক আছে। বাধ্যতামূলক সাইনগুলো সাধারণত গোলাকার হয়, যেমন নীল রঙের বৃত্তের মধ্যে সাদা তীরচিহ্ন যা একটি নির্দিষ্ট দিকে যাওয়ার নির্দেশ দেয়, অথবা লাল বর্ডারযুক্ত সাদা বৃত্ত যার মধ্যে কালো রেখা থাকে যা কোনো কাজ করতে নিষেধ করে (যেমন, নো এন্ট্রি)। নির্দেশনামূলক সাইনগুলো সাধারণত আয়তাকার হয় এবং বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে, যেমন হাইওয়ের নম্বর, পার্কিং এলাকা বা সার্ভিস এরিয়া। কিছু বিশেষ সাইনও আছে, যেমন “Anlieger frei” যার অর্থ শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য প্রবেশাধিকার। এই সাইনগুলো ভালো করে জেনে রাখলে আপনার যাত্রা অনেক মসৃণ হবে।

শহরের ভেতরের নিয়মকানুন

অটোবানের উচ্চ গতির পর শহরের ভেতরের রাস্তায় গাড়ি চালানোটা এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। এখানে গতিসীমা সাধারণত ৫০ কিমি/ঘণ্টা থাকে, আরresidential এলাকায় ৩০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত নেমে আসে। আমার অভিজ্ঞতা বলে, শহরের ভেতরের রাস্তায় পথচারী এবং সাইকেল আরোহীদের প্রতি অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়। এখানে পথচারীদের অগ্রাধিকার সব সময়। একবার আমি প্রায় ভুলেই যাচ্ছিলাম যে জেব্রা ক্রসিংয়ে পথচারীকে আগে যেতে দিতে হয়, ভাগ্যিস পাশে বসে থাকা আমার জার্মান বন্ধুটি মনে করিয়ে দিয়েছিল!

ট্র্যাফিক লাইটগুলোও এখানে খুব সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করে, এবং ট্র্যাফিক জ্যামের অভিজ্ঞতা আমাদের দেশের মতো অতটা প্রকট নয়। পার্কিংয়ের নিয়মগুলোও বেশ কঠোর। নির্দিষ্ট স্থানে এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য পার্কিং করতে হয়, যা পার্কিং সাইন দ্বারা নির্দেশিত থাকে। ভুল জায়গায় পার্ক করলে বা সময়সীমা অতিক্রম করলে বড় ধরনের জরিমানা গুনতে হতে পারে।

বিপদে পড়লে কী করবেন? জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি

গাড়ি চালাতে গিয়ে কে না চায় যে সব কিছু ঠিকঠাক চলুক! কিন্তু রাস্তাঘাটে তো আর সবসময় সব কিছু আপনার ইচ্ছেমতো চলবে না। হঠাৎ করে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা আপনার গাড়ি মাঝ রাস্তায় খারাপ হয়ে গেলে কী করবেন?

এই চিন্তাটা আমাকেও খুব ভাবাতো, বিশেষ করে যখন আমি জার্মানিতে নতুন ড্রাইভিং শুরু করেছিলাম। আমি সবসময় আমার গাড়িতে ফার্স্ট এইড কিট, ওয়ার্নিং ট্রায়াঙ্গেল এবং একটা সেফটি ভেস্ট রাখতাম, কারণ এগুলো জার্মানিতে আইনত বাধ্যতামূলক। আমার মনে আছে, একবার অটোবানে একটা গাড়ির টায়ার ফেটে গিয়েছিল, আর চালক ঠিকমতো জরুরি অবস্থার নিয়ম না জানায় একটা ছোট দুর্ঘটনা বড় আকার নিতে পারছিল। সৌভাগ্যবশত, সে যাত্রায় বড় কিছু হয়নি। কিন্তু এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে আমাদের কিছু জরুরি প্রস্তুতি নিয়ে রাখতেই হবে।

দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে করণীয়

যদি দুর্ভাগ্যবশত কোনো ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেই যায়, তাহলে প্রথমেই শান্ত থাকাটা খুব জরুরি। আমার প্রথম ছোটখাটো দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা হয়েছিল যখন আমি একটি ভাড়ার গাড়ি চালাচ্ছিলাম। তখন আমি এতটাই নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম যে কী করব সেটাই বুঝতে পারছিলাম না!

জার্মানির নিয়ম অনুযায়ী, দুর্ঘটনার পর প্রথমেই সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে এবং ওয়ার্নিং ট্রায়াঙ্গেল স্থাপন করতে হবে যাতে অন্য চালকরা সতর্ক হতে পারে। যদি কেউ আহত হয়, তাহলে দেরি না করে জরুরি নম্বরে (১১২) ফোন করে পুলিশ এবং অ্যাম্বুলেন্সকে জানাতে হবে। যদি ছোটখাটো ক্ষতি হয় এবং কেউ আহত না হয়, তাহলে ঘটনাস্থল থেকে সরে যাওয়ার আগে ছবি তুলে রাখা উচিত এবং অন্য জড়িত পক্ষের তথ্য বিনিময় করা উচিত। কোনো অবস্থাতেই ঘটনাস্থল থেকে না জানিয়ে চলে যাওয়া উচিত নয়, কারণ এটা গুরুতর অপরাধ।

Breakdown বা গাড়ির সমস্যা হলে

আপনার গাড়ি যদি মাঝ রাস্তায় খারাপ হয়ে যায়, বিশেষ করে অটোবানে, তাহলে এটা বেশ ভয়ের ব্যাপার হতে পারে। আমার একবার গাড়ির ব্যাটারি ডাউন হয়ে গিয়েছিল একটি নির্জন রাস্তায়, আর তখন মনে হয়েছিল কী করব!

প্রথমে গাড়িকে নিরাপদ স্থানে, যদি সম্ভব হয়, রাস্তার পাশে সরিয়ে নিতে হবে। এরপর ওয়ার্নিং ট্রায়াঙ্গেল স্থাপন করতে হবে এবং গাড়ির ভেতরে থাকা সেফটি ভেস্ট পরে নিতে হবে। জার্মানির অনেক গাড়ি বিমা কোম্পানি রাস্তায় জরুরি সহায়তা প্রদান করে। যদি আপনার এমন কোনো বিমা না থাকে, তাহলে ADAC (Allgemeiner Deutscher Automobil-Club) এর মতো সংস্থাগুলোর সাহায্য নিতে পারেন, যারা রাস্তার পাশে গাড়ি মেরামতের পরিষেবা দেয়। আপনার মোবাইল ফোনে সবসময় জরুরি কিছু নম্বর সেভ করে রাখা উচিত। আর হ্যাঁ, শীতকালে গাড়ি চালালে বাড়তি কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি, যেমন অ্যান্টি-ফ্রিজ বা কম্বল সঙ্গে রাখা।

Advertisement

নিজের গাড়ি না ভাড়ার গাড়ি: কোনটি আপনার জন্য সেরা?

জার্মানিতে এসে গাড়ি কেনার চিন্তা অনেকেই করেন, আবার অনেকে ভাড়ার গাড়িতেই সন্তুষ্ট থাকেন। আমারও এই নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা ছিল। প্রথমদিকে আমি ভাড়ার গাড়ি দিয়েই কাজ চালিয়েছিলাম, কারণ তখন আমি জানতাম না যে কতদিন এখানে থাকব। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন এখানে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হলো, তখন নিজের একটা গাড়ি কেনার চিন্তা মাথায় আসতে শুরু করল। আসলে, দুটো বিকল্পেরই নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা আছে। আপনার প্রয়োজন, বাজেট এবং জার্মানিতে থাকার মেয়াদ এই বিষয়গুলোই মূলত আপনার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে। আমি দেখেছি, অনেকে স্বল্প সময়ের জন্য এখানে এলে ভাড়ার গাড়িকেই বেশি পছন্দ করেন, আবার যারা দীর্ঘমেয়াদী বসবাস করেন, তারা নিজস্ব গাড়ির দিকেই বেশি ঝোঁকেন।

ভাড়ার গাড়ির সুবিধা-অসুবিধা

독일에서 운전하는 법 - **Prompt:** From a driver's perspective inside a sleek, modern car, the view stretches out onto a mu...

ভাড়ার গাড়ির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো স্বাধীনতা আর ঝামেলামুক্ত থাকা। আমার মনে আছে, যখন ভাড়ার গাড়ি চালাতাম, তখন গাড়ির মেইনটেনেন্স, ইন্স্যুরেন্স বা রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমাকে কোনো চিন্তা করতে হয়নি। শুধুমাত্র জ্বালানি ভরা আর ড্রাইভিং এনজয় করা!

এটা নতুন যারা জার্মানিতে এসেছেন, তাদের জন্য খুব ভালো একটা বিকল্প। আপনি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালিয়ে দেখার সুযোগ পান এবং আপনার প্রয়োজনে গাড়ির আকার পরিবর্তন করতে পারেন। তবে হ্যাঁ, এর কিছু অসুবিধাও আছে। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য ভাড়ার গাড়ি কিছুটা ব্যয়বহুল হতে পারে। এছাড়াও, বুকিংয়ের সময়মতো গাড়ি পাওয়া বা আপনার পছন্দের মডেল সব সময় না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমার এক বন্ধু একবার শেষ মুহূর্তে ভাড়ার গাড়ি না পেয়ে তার পুরো ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল।

নিজস্ব গাড়ি কেনার ভাবনা

যদি আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য জার্মানিতে থাকেন, তাহলে নিজস্ব গাড়ি কেনাটা বেশ লাভজনক হতে পারে। আমার নিজের একটা গাড়ি কেনার পর মনে হয়েছে যেন এক নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। যখন খুশি যেখানে খুশি যেতে পারি, কোনো বুকিংয়ের ঝক্কি নেই। নিজস্ব গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে প্রথমে গাড়ির ধরন, বাজেট, এবং তার মেইনটেনেন্স খরচ নিয়ে ভালো করে গবেষণা করা উচিত। নতুন গাড়ি বা ব্যবহৃত গাড়ি কেনার দুটি বিকল্পই আছে। ব্যবহৃত গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে TUV (Technischer Überwachungsverein) এর একটি বৈধ সার্টিফিকেট দেখে নেওয়াটা খুব জরুরি, যা গাড়ির নিরাপত্তা এবং পরিবেশগত মান নিশ্চিত করে। গাড়ি কেনার পর রেজিস্ট্রেশন, ইন্স্যুরেন্স, এবং নিয়মিত TUV পরিদর্শন এই সব দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। তবে একবার এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হলে, নিজস্ব গাড়ির সুবিধাগুলো সত্যিই অনবদ্য।

গাড়ি চালানো থেকে পার্কিং: আরও কিছু জরুরি টিপস

জার্মানিতে গাড়ি চালানোটা শুধু নিয়মকানুন মেনেই শেষ হয় না, কিছু ছোটখাটো টিপস আছে যা আপনার ড্রাইভিং অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দময় করে তুলতে পারে। আমার প্রথমবার জার্মানির কোনো ছোট শহরে গাড়ি পার্ক করার অভিজ্ঞতাটা ছিল বেশ মজার। পার্কিং সাইন দেখে যখন বুঝতে পারছিলাম না কতক্ষণের জন্য পার্ক করব, তখন এক স্থানীয় ভদ্রলোক আমাকে সাহায্য করেছিলেন। এসব ছোটখাটো বিষয়ে আগে থেকে জেনে রাখলে অনেক ঝামেলা এড়ানো যায়। আমাদের দেশের মতো এখানে এলোমেলোভাবে পার্কিং করার কোনো সুযোগ নেই, সব কিছুতেই একটা সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তাই গাড়ি চালানো বা পার্কিং, সবক্ষেত্রেই এখানকার সংস্কৃতি এবং নিয়মগুলো মেনে চলাটা খুব জরুরি।

পার্কিং এর নিয়মাবলী

জার্মানিতে পার্কিংয়ের নিয়মগুলো বেশ কঠোর। আমার মনে আছে, একবার আমি ভুল করে একটি আবাসিক এলাকার পার্কিংয়ে বেশিক্ষণ গাড়ি রেখেছিলাম, আর তার জন্য একটি বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়েছিল। এখানে সাধারণত “Parkraumbewirtschaftung” অর্থাৎ পার্কিং স্পেস ব্যবস্থাপনা খুব উন্নত। যেখানে “P” সাইন আছে, সেখানেই পার্ক করা যাবে। অনেক জায়গায় পার্কিংয়ের জন্য “পার্ক ডিস্ক” (Parkscheibe) ব্যবহার করতে হয়, যেখানে আপনি কখন গাড়ি পার্ক করেছেন তা নির্দেশ করতে হয়। কিছু কিছু এলাকায় পার্কিং ফি দিতে হয়, যা পার্কিং মেশিনে প্রদান করে রশিদটি গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনে রাখতে হয়। এছাড়াও, “Parkverbot” (পার্কিং নিষেধ) বা “Halteverbot” (থামা নিষেধ) সাইনগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয়। মনে রাখবেন, ফুটপাতে বা সাইকেল লেনে পার্ক করা একেবারেই নিষিদ্ধ এবং এর জন্য বড় ধরনের জরিমানা হতে পারে।

শীতকালে গাড়ি চালানো

জার্মানির শীতকাল আমার জন্য এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা ছিল। বরফ আর তুষারপাতের মধ্যে গাড়ি চালানোটা সত্যি চ্যালেঞ্জিং। আমার প্রথম শীতকালীন ড্রাইভিং অভিজ্ঞতাটা ছিল একটু ভীতিকর। বরফ পড়া রাস্তায় যখন গাড়ি চালাচ্ছিলাম, তখন মনে হয়েছিল যেন পিছলে যাব!

শীতকালে জার্মানিতে “M+S” (Mud and Snow) বা “Alpine Symbol” চিহ্নিত শীতকালীন টায়ার (Winterreifen) ব্যবহার করা আইনত বাধ্যতামূলক। এটা শুধু আপনার সুরক্ষার জন্যই নয়, অন্য গাড়ির সুরক্ষার জন্যও জরুরি। এছাড়াও, শীতকালে গাড়ির উইন্ডশিল্ড পরিষ্কার রাখার জন্য অ্যান্টি-ফ্রিজ ফ্লুইড ব্যবহার করা এবং গাড়ির হেডলাইট ও টেইললাইট নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। কুয়াশা বা তুষারপাতের সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হয় এবং গাড়ির গতি কমিয়ে চালানো উচিত। শীতকালে জরুরি অবস্থার জন্য গাড়িতে একটি কম্বল, ছোট বেলচা এবং স্যান্ডব্যাগ রাখাটাও বুদ্ধিমানের কাজ।

Advertisement

আমার দেখা সেরা ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা: জার্মানিতে গাড়ি চালানোর আনন্দ

বন্ধুরা, সত্যি বলতে, জার্মানিতে গাড়ি চালানোটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা। প্রথম প্রথম নিয়মকানুন নিয়ে একটু ভয়ে ভয়ে থাকলেও, ধীরে ধীরে যখন এখানকার রাস্তা আর ড্রাইভিং কালচারের সাথে পরিচিত হয়েছি, তখন মনে হয়েছে যেন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। আমি দেখেছি, এখানে প্রত্যেকেই ড্রাইভিংয়ের নিয়মকানুন সম্পর্কে খুব সচেতন এবং সবাই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখানকার রাস্তার মসৃণতা, সাইনেজের স্পষ্টতা এবং ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। একবার আমি স্যাক্সনি (Saxony) রাজ্যের মধ্য দিয়ে অটোবানে যাচ্ছিলাম, আর চারপাশের সবুজ প্রকৃতি আর সুন্দর গ্রামগুলো দেখতে দেখতে মনে হয়েছিল যেন কোনো ছবির ফ্রেমের মধ্য দিয়ে চলেছি। এই অভিজ্ঞতাটা সত্যিই ভুলবার নয়।

কেন জার্মানিতে ড্রাইভিং এত অসাধারণ?

জার্মানিতে ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা এত অসাধারণ হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, এর অন্যতম কারণ হলো এখানকার উন্নত রাস্তাঘাট এবং ড্রাইভিং সংস্কৃতি। এখানকার রাস্তাগুলো এতটাই মসৃণ এবং সুপরিকল্পিত যে গাড়ি চালানোটা সত্যিই আনন্দদায়ক। এছাড়াও, জার্মান চালকরা খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ এবং তারা ট্র্যাফিকের নিয়মকানুন খুব কঠোরভাবে মেনে চলে। এখানে হর্ন বাজানোর প্রবণতা খুবই কম, এবং সবাই ধৈর্য সহকারে গাড়ি চালায়। একবার আমি ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে পড়েছিলাম, কিন্তু আমাদের দেশের মতো এখানে কেউ হর্ন বাজিয়ে বা লেন ভেঙে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল না। সবাই ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করছিল। এই শৃঙ্খলা এবং চালকদের দায়িত্বশীলতা জার্মানির ড্রাইভিং অভিজ্ঞতাকে সত্যিই অনন্য করে তুলেছে।

নিরাপত্তা এবং আস্থা

জার্মানিতে গাড়ি চালানোর সময় আমি সবসময় একটা আত্মবিশ্বাস অনুভব করেছি, কারণ এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই মজবুত। গাড়ির নিয়মিত TUV পরিদর্শন, কঠোর ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা এবং ট্র্যাফিকের নিয়মকানুন কঠোরভাবে প্রয়োগের ফলে রাস্তাগুলো তুলনামূলকভাবে নিরাপদ থাকে। আমার মনে আছে, একবার আমার গাড়ির হেডলাইট খারাপ হয়ে গিয়েছিল, আর আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা ঠিক করিয়েছিলাম, কারণ জানতাম যে পুলিশ এর জন্য বড় ধরনের জরিমানা করতে পারে। এই ধরনের কঠোর নিয়মগুলো আসলে সবার ভালোর জন্যই। একজন ড্রাইভার হিসেবে, আপনি জানেন যে অন্যরাও নিয়ম মেনে চলবে, যা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। এটাই আমার মতে, জার্মানির রাস্তায় গাড়ি চালানোর সবচেয়ে বড় আনন্দ।

글을마치며

জার্মানিতে ড্রাইভিংয়ের এই অসাধারণ যাত্রাপথ শেষ করার আগে আপনাদের একটাই কথা বলতে চাই – এটা শুধু গাড়ি চালানো নয়, এটা এক দারুণ অভিজ্ঞতা! এখানকার শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন মুগ্ধ করে তোলে। প্রথম দিকে হয়তো একটু কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু একবার এখানকার নিয়মগুলো বুঝে ফেললে আপনার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে বহুগুণ। আমি নিজে এই অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখেছি এবং আমার মনে হয়, আপনাদেরও এই রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চারটা একবার হলেও নেওয়া উচিত।

Advertisement

알아দু면 쓸모 있는 정보

১. আপনার দেশের ড্রাইভিং লাইসেন্স জার্মানিতে আসার পর সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। এর পর জার্মান লাইসেন্সে রূপান্তর করা আবশ্যক।

২. যদি আপনার বিদেশি লাইসেন্স ইংরেজিতে না থাকে, তাহলে একটি জার্মান অনুবাদ বা আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট (IDP) সঙ্গে রাখুন। এটি যেকোনো ঝামেলা এড়াতে সাহায্য করবে।

৩. অটোবানে যদিও অনেক জায়গায় গতির ঊর্ধ্বসীমা নেই, তবে সর্বদা রাস্তার অবস্থা এবং ট্র্যাফিকের ঘনত্ব অনুযায়ী নিরাপদ গতিতে গাড়ি চালান। কিছু নির্দিষ্ট স্থানে গতির সীমা অবশ্যই মেনে চলুন।

৪. শীতকালে (সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিল) বরফ ও তুষারপাতের সময় শীতকালীন টায়ার (Winterreifen) ব্যবহার করা আইনত বাধ্যতামূলক। এটি আপনার এবং অন্যদের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

৫. পার্কিংয়ের নিয়মগুলো খুব কঠোর। সর্বদা পার্কিং সাইন দেখে পার্ক করুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পার্ক ডিস্ক (Parkscheibe) বা পার্কিং ফি ব্যবহার করুন। ভুল পার্কিংয়ের জন্য বড় অঙ্কের জরিমানা হতে পারে।

중요 사항 정리

জার্মানিতে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক বিষয় মনে রাখা খুবই জরুরি। এগুলো মেনে চললে আপনার যাত্রা কেবল নিরাপদই হবে না, বরং অনেক বেশি আনন্দদায়কও হবে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, এই ছোট ছোট বিষয়গুলো অনেক বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

আইনকানুন মেনে চলুন

  • ড্রাইভিং লাইসেন্স: ছয় মাস পর আপনার বিদেশি লাইসেন্সকে জার্মান লাইসেন্সে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু করুন। এর জন্য তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক উভয় পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি রাখুন।

  • গতির সীমা: অটোবানে গতির সীমা না থাকলেও, সবসময় সতর্ক থাকুন এবং রাস্তার নির্দেশাবলী মেনে চলুন। শহরের ভেতরে এবং আবাসিক এলাকায় কঠোরভাবে গতির সীমা অনুসরণ করুন।

  • লেনের নিয়ম: অটোবানে বাম লেন শুধুমাত্র ওভারটেকিংয়ের জন্য ব্যবহার করুন এবং ডান দিক দিয়ে ওভারটেক করা থেকে বিরত থাকুন। ওভারটেক করার পর দ্রুত ডান লেনে ফিরে আসুন।

নিরাপত্তা সর্বাগ্রে

  • গাড়ির প্রস্তুতি: গাড়িতে সবসময় ফার্স্ট এইড কিট, ওয়ার্নিং ট্রায়াঙ্গেল এবং সেফটি ভেস্ট রাখুন। শীতকালে শীতকালীন টায়ার ব্যবহার নিশ্চিত করুন এবং গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্ব দিন।

  • জরুরি অবস্থা: দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে শান্ত থাকুন, নিরাপদ স্থানে সরে যান এবং জরুরি নম্বরে (১১২) ফোন করুন। গাড়ির সমস্যা হলে ADAC এর মতো সার্ভিসগুলোর সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, জার্মান ড্রাইভিং সংস্কৃতিতে সম্মান এবং ধৈর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার চালকরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন, যা রাস্তাগুলোকে নিরাপদ রাখে। এই সংস্কৃতিকে সম্মান করে চললে আপনার জার্মানির ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা অবিস্মরণীয় হয়ে উঠবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: জার্মানিতে আপনার বিদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে কতদিন পর্যন্ত গাড়ি চালাতে পারবেন?

উ: এই প্রশ্নটা প্রায় সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করেন! আমি যখন প্রথম জার্মানিতে এসেছিলাম, তখন আমারও একই চিন্তা ছিল। সত্যি বলতে, আপনার বিদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে জার্মানিতে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত গাড়ি চালাতে পারবেন। এটা কিন্তু আপনার জার্মানিতে রেজিস্ট্রেশনের তারিখ থেকে গণনা করা হয়, মানে আপনার Wohnsitz (আবাসিক নিবন্ধন) হওয়ার পর থেকে। এই ছয় মাস সময়টা যথেষ্ট, যাতে আপনি এখানকার ট্রাফিক সিস্টেম আর নিয়মকানুনের সাথে একটু পরিচিত হতে পারেন। তবে, আপনি যদি পর্যটক হিসেবে আসেন এবং আপনার থাকার মেয়াদ এক বছরের কম হয়, তাহলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে আপনার লাইসেন্স এক বছর পর্যন্ত বৈধ থাকতে পারে। কিন্তু যদি আপনি এর বেশি সময় ধরে এখানে থাকেন এবং গাড়ি চালাতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই জার্মান ড্রাইভিং লাইসেন্সে রূপান্তর করতে হবে। আমি নিজেই এই সময়ের মধ্যে এখানকার সব নিয়মকানুন বোঝার চেষ্টা করেছি, কারণ এরপরই আসল চ্যালেঞ্জ শুরু হয়!
এই সময়ের মধ্যে আমি অনেককে দেখেছি যারা নিয়ম না মেনে বিপদে পড়েছেন, তাই সাবধান!

প্র: আমার বিদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সটিকে জার্মান লাইসেন্সে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াটি আসলে কেমন? এটা কি খুব কঠিন?

উ: কঠিন বলব না, তবে একটু সময়সাপেক্ষ আর ঝামেলার তো বটেই! আমি যখন আমার লাইসেন্স রূপান্তরের কথা ভেবেছিলাম, তখন আমার নিজেরই মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল এতো কাগজপত্রের কথা ভেবে। সহজভাবে বলতে গেলে, প্রথমে আপনার বিদেশি লাইসেন্সটি জার্মান ভাষায় অনুবাদ করাতে হবে, যদি সেটি আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট না হয়। এরপর আপনাকে একটি দৃষ্টি পরীক্ষা (Eye Test) এবং একটি প্রাথমিক চিকিৎসার কোর্স (First-Aid Course) করতে হবে, যদি আপনার এর আগে এমন কোনো কোর্স করা না থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা পাস করা। কিছু দেশের লাইসেন্স (যেমন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা নির্দিষ্ট কিছু দেশ) সরাসরি রূপান্তর করা যায়, অর্থাৎ তাদের পরীক্ষা দিতে হয় না। কিন্তু বেশিরভাগ দেশের লাইসেন্সের ক্ষেত্রে আপনাকে ড্রাইভিং স্কুলের (Fahrschule) মাধ্যমে তাত্ত্বিক (Theorieprüfung) এবং ব্যবহারিক (Praktische Prüfung) উভয় পরীক্ষা দিতে হবে। আমি নিজে একটি ড্রাইভিং স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম, কারণ এখানকার ট্রাফিক নিয়মগুলো একটু আলাদা আর পরীক্ষার ধরনও বেশ কঠিন। হ্যাঁ, খরচও কিন্তু নেহাত কম নয়, তাই আগে থেকেই বাজেট করে রাখা ভালো। আমার অভিজ্ঞতা বলে, ভালো করে প্রস্তুতি নিলে আর সঠিক ড্রাইভিং স্কুল বেছে নিলে কাজটা সহজ হয়ে যায়।

প্র: জার্মানির রাস্তায়, বিশেষ করে অটোবানে গাড়ি চালানোর জন্য কিছু জরুরি টিপস আর নিয়মাবলী জানতে চাই। যা আমাকে বিপদে ফেলতে পারে এমন কিছু?

উ: আরে ভাই, জার্মানির রাস্তায় গাড়ি চালানোর মজাই আলাদা! বিশেষ করে অটোবানে। কিন্তু আনন্দের সাথে কিছু জরুরি নিয়মকানুনও জেনে রাখা দরকার, যা আপনাকে বিপদে পড়া থেকে বাঁচাবে। আমার নিজের প্রথম অটোবানের অভিজ্ঞতা ছিল একটু মিশ্র, কারণ গতি আর শৃঙ্খলার এমন মেলবন্ধন আগে দেখিনি। প্রথমত, অটোবানে স্পিড লিমিট না থাকলেও (কিছু জায়গায় থাকে), ‘আনলিমিটেড স্পিড’ মানে এই নয় যে আপনি ইচ্ছামতো গাড়ি চালাবেন। সবসময় ডান দিকের লেন ব্যবহার করবেন এবং শুধুমাত্র ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকের লেন ব্যবহার করবেন। ওভারটেক করার পর দ্রুত ডান লেনে ফিরে আসাটা এখানকার অলিখিত নিয়ম, আর এটা না মানলে পেছনের গাড়ির ড্রাইভাররা কিন্তু মোটেই খুশি হন না!
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জরুরি লেনে (Emergency Lane) কখনো গাড়ি চালাবেন না বা থামাবেন না, শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স বা পুলিশ ব্যবহার করতে পারে। শহরের ভেতরে স্পিড লিমিট সাধারণত ৫০ কিমি/ঘণ্টা এবং আবাসিক এলাকায় ৩০ কিমি/ঘণ্টা। পার্কিংয়ের নিয়মগুলোও বেশ কড়া, ভুল জায়গায় পার্ক করলে ভারী জরিমানা গুণতে হতে পারে। আর সবচেয়ে জরুরি, জার্মানিতে ড্রাইভিং করার সময় মদ্যপান করে গাড়ি চালানো একদমই চলবে না। এখানে রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমি নিজেও প্রথমদিকে অনেক সাবধানে গাড়ি চালাতাম, প্রতিটি সাইন বোর্ড ভালো করে দেখে নিতাম। মনে রাখবেন, এখানে ট্রাফিক আইনগুলো এতটাই সুসংগঠিত যে একটু অসাবধানতাও বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। নিরাপদ ড্রাইভিং মানেই আনন্দদায়ক ড্রাইভিং, তাই না?

📚 তথ্যসূত্র

Advertisement